সড়ক নিরাপত্তার উন্নয়নের অংশ হিসেবে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) একটি ১২ লেনের যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র (ভিআইসি) স্থাপনের করেছে। ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পে সরকার ১০৫ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয় করছে। চালু হওয়ার পর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে এই কেন্দ্রটি। তবে বিআরটিএর প্রস্তাব অনুযায়ী, কেন্দ্রটি ৫ বছরের জন্য বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে এবং মেয়াদ শেষে বিআরটিএর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বিআরটিএ মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, রুট পারমিট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে। তাই বিআরটিএ কর্মকর্তারা মনে করছেন, ভিআইসি সারাদেশে সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমাতে সাহায্য করবে।
একটি মোটরযান সড়কে চলার উপযোগী কি না তা জানতে কমবেশি ৬৪টি জিনিস পরীক্ষা করে দেখা হয়। এর বেশিরভাগ খালি চোখে পরীক্ষা করা যায় না। তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সেটাই করছে। এতে পরিবেশদূষণকারী ও চলাচলের অযোগ্য যানবাহন সড়কে চলার অনুমতি পেয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া অনুমাননির্ভর এসব ফলাফল তৈরিতে সংশ্লিষ্টদের কারসাজি ও অবৈধ লেনদেনও হয়। এসব সমস্যা দূর করতে শিগগিরই বিআরটিএর মিরপুর-১৩ কার্যালয়ে চালু হচ্ছে একটি ১২ সারির স্বয়ংক্রিয় মোটরযান পরীক্ষাকেন্দ্র, যা যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র (ভিআইসি) নামে পরিচিত।
বিআরটিএ কর্মকর্তারা জানান, নতুন এ পরীক্ষাকেন্দ্রে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মোটরযানের হেডলাইট, গতি, ধোঁয়া, ব্রেক, সাসপেনশনসহ সব ধরনের ফিটনেস পরীক্ষা করা হবে। প্রতিটি ধাপের ফল আলাদাভাবে এবং চূড়ান্ত ফল স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রস্তুত করা হবে। পরে একটি কপি গ্রাহকের মেইলে চলে যাবে।
জানা যায়, ২০২১ সালে এ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। এ কেন্দ্রের ভবন নির্মাণে ব্যয় হয় ১৬ কোটি টাকা। আর যেসব যন্ত্রপাতি দরকার তা সরবরাহ ও পাঁচ বছর পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্ব পেয়েছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম নামে একটি বেসরকারি কোম্পানি। তাদের এ পাঁচ বছর মোট ১৫ লাখ যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা বাবদ ১০৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে।
এ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০টি বিভিন্ন প্রকারের গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করানো যাবে। তিনি আরও বলেন, এ কেন্দ্রের মাধ্যমে ফিটনেস প্রদান করা হলে মোটরযান থেকে পরিবেশদূষণ হ্রাস করা সম্ভব হবে। ত্রুটিযুক্ত যানবাহন ফিটনেস সনদ পাবে না, ফলে সড়কে দুর্ঘটনা কমবে। এ কেন্দ্রের মাধ্যমে ডিজিটাল সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করবে এবং সিস্টেমে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
বিআরটিএর চাহিদা রিপোর্টিং সিস্টেম তৈরি ও চাহিদা মোতাবেক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করা যাবে। সিস্টেমটি অনলাইন ওয়েববেজড হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যবহুল ড্যাশবোর্ড এবং কেন্দ্রীয়ভাবে সিসিটিভি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে, যা যেকোনো স্থান থেকে মনিটরিং করা যাবে।